যে কাজ করতে পারেনি বিশ্বের তাবৎ দুঁদে সব বিনোদন সাংবাদিক, হাফসুল খেয়ে গেছে ধুরন্ধর গুজবে সাংবাদিকেরাও, হাল ছেড়ে দিয়েছেন অপরাহ উইনফ্রের মতো প্রভাবশালী টিভি ব্যক্তিত্বরা; সেই কাজটাই করে ফেলল কয়েকজন শিশু! যাদের কারোরই বয়স এখনো ১১ পেরোয়নি!


সেই শিশুরাই করেছে অসাধ্য সাধন। ‘বিয়ে’
শব্দটা শুনলে আগে যাঁরা অবজ্ঞার হাসি হাসতেন,
‘যদিং হূদয়ং মম’ কিংবা ‘আই ডু’ যাঁদের কাছে ছিল
স্রেফ ছেলেভুলানো ছড়ামাত্র; সেই ব্র্যাড পিট আর
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি অবশেষে বিয়ে করতে চলেছেন।
সম্পর্কের সাত বছরের মাথায়, সংসারে ছয়টি সন্তান
আসার পর অবশেষে ধর্মীয়ভাবেই
বিয়ে করতে রাজি হয়েছে ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’ জুটি। আর
তাঁদের বিয়ে করাতে রাজি করিয়েছে তাঁদের ছয়
শিশুসন্তান!
২০০৫ সালে মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ ছবির
সেটে দুজনার মন দেওয়া-নেওয়া শুরু। পিটের তখন
জেনিফার অ্যানিস্টনের
সঙ্গে রীতিমতো সাজানো সংসার। সেই সংসারে ঝড়
হয়ে এলেন জোলি। পিটের সঙ্গে তাঁর প্রেম
নিয়ে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ হলো। কিন্তু দুজনই
অস্বীকার করে যেতে লাগলেন। অ্যানিস্টন আর পিট
আলাদা হয়ে যেতেই সব পরিষ্কার হয়ে গেল। এ সময়
পিপল সাময়িকীকে সাক্ষাৎকার
দিয়ে অনেকটা ‘কনফেশান’ করলেন জোলি। তাঁর
অভিনেতা বাবাও একসময় তাঁর মায়ের
সঙ্গে প্রতারণা করেছিল বলে বাবা কী ঘৃণাই
না করতেন। অথচ ভাগ্যের কী পরিহাস, তিনিই এখন
জড়িয়ে পড়েছেন এমন একটা কাণ্ডে!
কারও সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে জোলির রাশিতে সব
সময়ই শনির কু-নজর পড়ে। ১৪ বছর বয়সে উন্মাতাল
প্রেম করতেন। নিজের বাড়িতে মায়ের রক্তচক্ষু অগ্রাহ্য
করে প্রেমিককে নিয়ে সংসারও পেতে বসেছিলেন।
সম্পর্কটা দুই বছরের বেশি টেকেনি। ১৯৯৬
সালে বিয়ে করেছিলেন ব্রিটিশ
অভিনেতা জনি লি মিলারকে। এক বছরের মধ্যেই
বিচ্ছেদ! ২০০০ সালে বিয়ে করলেন বিলি বব থ্রন্টনকে।
দুই বছরের মধ্যে আবারও বিচ্ছেদ।
পিটের অভিজ্ঞতা এতটা খারাপ নয়। যদিও তিন বছর
প্রেম করার পর অভিনেত্রী গিনেথ প্যালট্রর
সঙ্গে বাগদান হলো যখন, সেই বাগদানের আয়ু ছিল
মাত্র ছয় মাস। অ্যানিস্টনের সঙ্গে অবশ্য সুখেই
ছিলেন। পাঁচ বছর ঘরসংসার করার পরই ‘মিসেস
স্মিথ’কে খুঁজে পাওয়া।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কারণেই কি না, বিয়ের
ব্যাপারে দুজনেরই কোনো আগ্রহ ছিল না। একসময়
তো এমন মন্তব্যও করেছিলেন, যেদিন এই পৃথিবীর
‘সবাই’ বিয়ের অধিকার পাবে, সেদিন বিয়ে করব।
‘সবাই’ বলতে তাঁরা সমকামীদের বিয়ের অধিকারের
প্রশ্নটি তুলে এনেছিলেন।
বিয়ে না করলেও কিন্তু সাজানো সংসার তাঁদের। ‘বড়
পরিবারই সুখী পরিবার’ নীতিতে বিশ্বাসী এই জুটির
ঘরে আছে ছয়টি সন্তান। ম্যাডক্স, প্যাক্স ও জারা—
এই তিনজনকে অবশ্য দত্তক নিয়েছেন। অন্য তিনজন
শিলো, নক্স ও ভিভিয়েনে। এই বাচ্চাদের কারণেই
অবশেষে বাগদান হলো জোলি-পিটের। বাগদানের গর্বিত
সাক্ষী হিসেবে জোলির অনামিকায়
শোভা পাচ্ছে ডায়মন্ডের আংটি। খ্যাতনামা অংলকার
নির্মাতা রবার্ট প্রকপের সঙ্গে বসে পিট
নিজে নকশা করেছেন মহামূল্যবান আংটির।
আগের অবস্থান থেকে সরে এসে বিয়েতে মত দেওয়ার
পেছনে যে সন্তানেরাই মূল ভূমিকা রেখেছে,
সে কথা কদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে স্বীকারও
করেছেন পিট, ‘আমাদের বাচ্চাদের কাছে এটা অনেক
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওরা শুধু বারবার আমাদের
বিয়ের কথা বলে। হ্যাঁ, এটা এখন আমার কাছেও অনেক
গুরুত্বপূর্ণ।’ পিট অবশ্য পাদটীকায় যোগ করেছেন,
তিনি এখনো বিশ্বাস করেন, ধর্মীয় শপথ
কিংবা কাগজে সই নয়, শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের সেতু
হয়ে থাকে ভালোবাসাই।
বাগদান হলেও বিয়ের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তবে কথায় আছে না—শুভস্য শীঘ্রম!
প্রথম আলো থেকে সংগ্রহিত:
 রাজীব হাসান
তথ্য: বার্তা সংস্থা

0 comments: